গর্ভাবস্থায় বমি কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে আবার শুরু হয় কেন?
গর্ভাবস্থায় সব মহিলাদের বমি হয়, কিন্তু প্রশ্ন হলো গর্ভাবস্থায় বমি কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে আবার শুরু হয় কেন? এই বিষয় নিয়ে আজকে আমরা জানবো।
পোস্ট সুচিপত্রঃআপনার ও যদি এই প্রবলেম হয়ে থাকে তাহলে আজকের এই পস্টি সম্পূর্ণ আপনার পরতেহবে তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই গর্ভাবস্থায় বমি কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে আবার শুরু হয় কেন?
ভুমিকা
গর্ভাবস্থায় বমি একটি সাধারণ সমস্যা, যা প্রায় সব মায়েদেরই কিছু না কিছু সময়ের জন্য ভুগতে হয়। কিন্তু, অনেক সময় মায়েরা লক্ষ্য করেন যে, গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহের পর বমি বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুদিন পর আবার শুরু হয়। এই পরিস্থিতি অনেকের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে, তবে এটি সাধারণত স্বাভাবিক এবং কিছু ভিন্ন কারণের জন্য হয়ে থাকে। চলুন, বিস্তারিতভাবে জানি কেন গর্ভাবস্থায় এমনটা ঘটে এবং এর পিছনে থাকা কারণগুলো কী।
গর্ভাবস্থায় বমি: প্রথম ত্রৈমাসিকে সাধারণ সমস্যা
গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে (প্রথম ১২ সপ্তাহ) বমি এবং নউজিয়া (বমির অনুভূতি) হওয়া প্রায় সাধারণ একটি ঘটনা। এই সময়টা খুবই সংবেদনশীল, কারণ গর্ভের ভ্রূণের বিকাশ শুরু হয় এবং শরীর বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। হরমোনের পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রোজেস্টেরন এবং হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন (HCG) এর স্তরের বৃদ্ধি এই বমির সমস্যার মূল কারণ হতে পারে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে, প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে বা মধ্যভাগে বমি কমে যেতে পারে। এটি শরীরের অভিযোজনের ফল, কারণ তখন গর্ভের হরমোনের স্তর কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে আসে। কিন্তু, কিছু নারীর জন্য এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
কেন কিছুদিন পর আবার বমি শুরু হয়?
গর্ভাবস্থায় কিছুদিনের জন্য বমি বন্ধ হয়ে আবার শুরু হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ নিচে আলোচনা করা হলো:
১. হরমোনের পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় হরমোনের স্তরের দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে এই হরমোনের পরিমাণ কিছুটা স্থিতিশীল হলেও, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের মাঝামাঝি সময়ে আবার কিছু হরমোনের ওঠানামা দেখা যায়, যা আবার বমির অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেলে গর্ভাশয়ের পেশী শিথিল হতে পারে, যা বমির সৃষ্টি করতে পারে।
২. খাবারের প্রতি অনুভূতি
গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর খাবারের প্রতি অনুভূতি পরিবর্তিত হয়। কিছু খাবারের গন্ধ বা স্বাদ অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, যা বমির কারণ হতে পারে। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও যদি কোনো খাবারের প্রতি তীব্র অনীহা বা অস্বস্তি থাকে, তবে তা আবার বমি শুরু করতে পারে।
৩. স্ট্রেস এবং উদ্বেগ
গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং স্ট্রেসের প্রভাবও বমির মাত্রাকে বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে, যদি মায়ের মধ্যে অতিরিক্ত চিন্তা বা চাপ থাকে, তবে তা শারীরিকভাবে বমির অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভবতী মায়েরা যদি কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যার মধ্যে থাকেন, তাহলে তাদের শরীরে অতিরিক্ত টেনশন হতে পারে, যা বমি শুরু করতে পারে।
৪. গর্ভাবস্থার জটিলতা
গর্ভাবস্থায় কিছু জটিলতা যেমন গেস্টেশনাল হাইপারটেনশন বা গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হতে পারে, যা বমির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি এসব সমস্যা থাকে, তবে এটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। গর্ভাবস্থায় ডিহাইড্রেশন বা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবও বমির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে।
৫. শরীরের অবস্থান এবং শারীরিক পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় শরীরের বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে, যেমন গর্ভাশয় বড় হয়ে ওঠা, পেটের ওপর চাপ বাড়ানো, বা পেটের অঙ্গগুলির স্থান পরিবর্তন। এসব পরিবর্তন বিশেষ করে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের পর বমির অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি গর্ভের অবস্থান বা মায়ের পেটের অবস্থা অস্বস্তিকর হয়।
কখন ডাক্তারকে দেখাবেন?
যদি গর্ভাবস্থার মাঝখানে বা শেষে বমির অনুভূতি খুব তীব্র হয়ে ওঠে, অথবা যদি বমি অনেক দিন ধরে স্থায়ী হয়ে যায়, তবে এটি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার বিষয়। দীর্ঘস্থায়ী বা অতিরিক্ত বমি হতে পারে যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা বা গর্ভাবস্থার জটিলতা নির্দেশ করতে পারে। বিশেষত, যদি মায়ের খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো না হয় বা শরীরের ডিহাইড্রেশন লক্ষণ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
আরো পড়ুনঃ অপারেশন ছাড়া কি ওভারিয়ান সিস্টের চিকিৎসা করা যায় সম্পূর্ণ জানুন
গর্ভাবস্থায় বমি কমানোর কিছু উপায়
যদিও গর্ভাবস্থার বমি একটি স্বাভাবিক বিষয়, কিছু কার্যকর উপায় গ্রহণ করে এর প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব। নিচে গর্ভাবস্থার বমি কমানোর কিছু টিপস দেওয়া হলো:
১. খাবারের সময় এবং পছন্দে পরিবর্তন আনুন
গর্ভাবস্থায় ছোট ছোট পরিমাণে এবং ঘন ঘন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। একবারে বেশি খাওয়া বমি বাড়িয়ে দিতে পারে। তেলের ভারী খাবার এড়িয়ে হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার খান। যেমন - ফ্রেশ ফল, সবজি, বিস্কুট বা টোস্ট।
২. আদা এবং লেবুর ব্যবহার
আদা বমি কমাতে দারুণ কার্যকর। চা, খাবার বা স্রেফ গরম পানিতে আদা মিশিয়ে পান করতে পারেন। পাশাপাশি, লেবুর গন্ধ বা লেবু পানীয় বমির অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
গর্ভাবস্থায় ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে খেয়াল রাখুন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশি পানি না খেয়ে খাবার এবং পানীয়র সময়ে একটু বিরতি দিন।
৪. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং স্ট্রেস গর্ভাবস্থায় বমি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজনে কাজের চাপ কমিয়ে ফেলুন। ঘুমের সময়ও আরামদায়ক অবস্থানে থাকুন।
৫. তীব্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন
গর্ভাবস্থায় কিছু গন্ধ খুবই অস্বস্তিকর হতে পারে। যেসব গন্ধ বমির কারণ হতে পারে, যেমন মশলাদার খাবার, পারফিউম বা তেল, তা এড়িয়ে চলুন।
৬. গর্ভাবস্থার জন্য উপযুক্ত ভিটামিন গ্রহণ করুন
গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করুন। তবে, ভিটামিন খাওয়ার সময় বমি হলে সেটি খাওয়ার সময় বা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করুন।
৭. শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ এবং হালকা ব্যায়াম
গভীর শ্বাস নেওয়া বা হালকা ব্যায়াম (যেমন - হাঁটাহাঁটি) করলে বমির অনুভূতি কিছুটা কমতে পারে। বিশেষ করে সকালবেলা তাজা বাতাসে হাঁটা স্বস্তি এনে দিতে পারে।
বাড়তি সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় বমি কমানোর জন্য অনেকেই ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে থাকেন। তবে, কোনো ধরনের ওষুধ বা গাছ-গাছড়া ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, গর্ভাবস্থায় কোনো ভুল চিকিৎসা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া
গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা খুবই জরুরি। মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ শুধু বমি বাড়ায় না, বরং পুরো গর্ভকালীন সময়টি আরও কঠিন করে তোলে। মায়েদের উচিত পরিবারের কাছ থেকে যথেষ্ট মানসিক সমর্থন নেওয়া। একইসঙ্গে, নিজের ভালো লাগার কাজ যেমন বই পড়া, মিউজিক শোনা, বা পছন্দের সিনেমা দেখা করতে পারেন।
গর্ভাবস্থার বমি নিয়ে মায়েদের সাধারণ প্রশ্ন এবং উত্তর
গর্ভাবস্থার বমি নিয়ে অনেক মায়ের মনেই নানা প্রশ্ন থাকে। নিচে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো যা হয়তো আপনাকেও সাহায্য করতে পারে।
প্রশ্ন ১: গর্ভাবস্থার বমি কি আমার শিশুর জন্য ক্ষতিকর?
প্রশ্ন ২: কত দিন পর্যন্ত বমি হতে পারে?
প্রশ্ন ৩: বমি হলে কোন খাবার খাওয়া উচিত?
প্রশ্ন ৪: কীভাবে বুঝব যে আমার বমি গুরুতর?
গর্ভাবস্থার বমি নিয়ে পরিবারের ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় মায়ের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পরিবারের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের যত্ন নেওয়া এবং তার জন্য মানসিক শান্তি নিশ্চিত করা পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব। পরিবারের সদস্যরা নিম্নলিখিত কিছু কাজ করতে পারেন:
- সমর্থন দেওয়া: মায়ের মানসিক চাপ কমাতে তাকে সহানুভূতি এবং ভালোবাসা দেখানো জরুরি। তার সমস্যাগুলো মন দিয়ে শোনা এবং সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত।
- খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা: মা যেসব খাবারে স্বস্তি পান তা সরবরাহ করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ বা অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে তাকে সাহায্য করা।
- বিশ্রামের সুযোগ তৈরি করা: মায়ের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা এবং তার কাজের চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা উচিত।
- চিকিৎসার ব্যবস্থায় সাহায্য: যদি মায়ের বমি গুরুতর হয়, তাহলে তাকে সময়মতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা পরিবারের দায়িত্ব।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের করণীয় ও যত্ন নেওয়ার পরিপূর্ণ গাইড
গর্ভাবস্থায় বমি থেকে মুক্তির জন্য কিছু প্রাকৃতিক সমাধান
গর্ভাবস্থার বমি কমানোর জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপায় কার্যকর হতে পারে। এগুলোর মাধ্যমে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। তবে যেকোনো পদ্ধতি অনুসরণ করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
১. আদার ব্যবহার
আদা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা বমি এবং বমির অনুভূতি কমাতে কার্যকর। আপনি আদার চা তৈরি করে পান করতে পারেন অথবা আদার রস সামান্য মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও, আদার গুঁড়ো বা ক্যান্ডি আকারেও এটি ব্যবহার করা যায়।
২. লেবু এবং পুদিনা পাতা
লেবুর গন্ধ এবং স্বাদ বমি কমানোর জন্য খুবই উপকারী। এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন। পুদিনা পাতা চিবিয়ে খাওয়া বা এর চা বানিয়েও বমি কমানো যায়। পুদিনা পাতা শীতল অনুভূতি দেয় এবং হজমে সহায়তা করে।
৩. কোল্ড কমপ্রেস
গর্ভাবস্থার সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বমির অস্বস্তি কমাতে ঠাণ্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় বা ঠাণ্ডা কমপ্রেস কপালে ও ঘাড়ে রাখুন। এটি বমির প্রবণতা কমিয়ে স্বস্তি দিতে পারে।
৪. হালকা ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম
গর্ভাবস্থায় হালকা ব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ আপনাকে বমির অনুভূতি থেকে মুক্তি দিতে পারে। প্রতিদিন সকালে ১০-১৫ মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটা বা গর্ভাবস্থার উপযোগী যোগব্যায়াম বমি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৫. আরোমাথেরাপি
ল্যাভেন্ডার বা লেবু তেলের মতো সুগন্ধি তেল আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে এবং বমি কমাতে সহায়ক হতে পারে। কয়েক ফোঁটা তেল একটি রুমালে দিয়ে গন্ধ শুঁকুন অথবা ডিফিউজারে ব্যবহার করুন।
বমি কমাতে দৈনন্দিন কিছু করণীয়
গর্ভাবস্থার বমি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনন্দিন জীবনে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। এগুলো মেনে চললে আপনি কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন:
- প্রতিদিন সকাল শুরু করুন হালকা খাবার দিয়ে। ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে না থেকে কিছু শুকনো বিস্কুট বা টোস্ট খেয়ে দিন শুরু করুন।
- দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকা এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত ছোট ছোট খাবার খান, যাতে পেট কখনোই একেবারে খালি না থাকে।
- ধীরে ধীরে খাবার খান। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- উপযুক্ত পোষাক পরুন। খুব আঁটসাঁট বা অস্বস্তিকর পোশাক পরা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি পেটের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
- প্রচুর পানি পান করুন। তবে একবারে বেশি না খেয়ে ছোট ছোট চুমুক দিয়ে পানি পান করুন।
- ঘুমের সময় পিঠে না শুয়ে পাশে শোবার চেষ্টা করুন। এটি হজমে সহায়তা করে এবং বমির প্রবণতা কমায়।
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব
গর্ভাবস্থায় বমি হলেও শরীরের পুষ্টি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিকর খাবার মায়ের শরীরের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ভ্রূণের বিকাশে সহায়তা করে। তাই বমি এড়িয়ে যেসব খাবার খাওয়া যায় সেগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করুন:
- ফল এবং সবজি: তাজা ফল এবং সবজি বমি কমানোর পাশাপাশি পুষ্টি জোগায়।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মুরগি, বাদাম এবং মাছ খান, কারণ এগুলো ভ্রূণের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়।
- কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার: ভাত, আলু এবং পাস্তা খেলে এনার্জি পাওয়া যায় এবং এটি সহজপাচ্য।
- দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই এবং পনির ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে কাজ করে।
পরিবার ও বন্ধুদের ভূমিকা
গর্ভাবস্থার সময় মা যদি পরিবারের সাপোর্ট পান, তাহলে শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটা ভালো বোধ করেন। পরিবারের সদস্যরা কিছু কাজ করতে পারেন যা মা এবং ভ্রূণের জন্য উপকারী হতে পারে:
আরো পড়ুনঃ হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য সেরা খাবারগুলি: সম্পূর্ণ গাইড
- মায়ের সঠিক খাবার নিশ্চিত করা।
- মাকে কাজের চাপ থেকে মুক্ত রাখা।
- মায়ের সঙ্গে সময় কাটিয়ে তাকে মানসিকভাবে ভালো রাখতে সাহায্য করা।
- যেকোনো জটিলতার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে মাকে সাহায্য করা।
শেষ কথা
গর্ভাবস্থার বমি যদিও অস্বস্তিকর, এটি সাধারণত মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে মায়ের যত্ন নেওয়া এবং তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এবং দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনলে এই সমস্যা সহজেই সামলানো সম্ভব।
গর্ভাবস্থার প্রতিটি মুহূর্ত একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা হতে পারে যদি মায়ের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা ঠিকভাবে পূরণ করা যায়। পরিবারের সক্রিয় ভূমিকা এবং মায়ের সচেতনতা গর্ভাবস্থার যেকোনো সমস্যাকে সহজ করে তোলে।
ইভিনিং বিডিতে কমেন্ট করুন
comment url